ইলমে দ্বীন শেখানাের ফজীলত সম্পর্কে সাহাবায়ে - হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) জীবনী বই Part3

 আয়েশা রাঃ এর জীবনী

islamic history bangla

ইলমে দ্বীন শেখানাের ফজীলত সম্পর্কে সাহাবায়ে

কিরাম ও তাবেঈনদের বাণী। হযরত ওমর ফারুক (রাঃ) বলেন ঃ যে ব্যক্তি কোন হাদীস বর্ণনা করে এবং তদনুযায়ী কাজ করে, সে সেই লােকদের সমান সওয়াব পাবে যারা সে কাজ করবে।
বুযুর্গগণ বলেন ও আলেম ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর সৃষ্ট জীবের মধ্যে যােগসূত্র বিশেষ।

হযরত হাসান বসরী (রঃ) বলেন ঃ আলেম সম্প্রদায় না থাকলে সকল মানুষ। চতুষ্পদ জন্তুর মতাে হয়ে যেত। অর্থাৎ, আলেমরা ইলমে দ্বীন শেখানাের মাধ্যমে মানুষকে পশুত্ব থেকে বের করে মানবতার স্তরে পৌঁছে দেয়।

    Read More:  ➣   হযরত আদম (আঃ) জীবনী


ইয়াহইয়া ইবনে মুয়ায বলে
চেয়ে অধিক দয়াল ।
পিতামাতা মানুষকে দুনিয়ার
থেকে শুনেছি, তিনি ইরশা করা আল্লাহভীতি, তার
যা ইবনে মুয়ায বলেন ঃ খাটি আলেমগণ উম্মতের প্রতি পিতামাতার ক দয়ালু। লােকেরা জিজ্ঞেস করল ঃ তা কিভাবে? তিনি বললেনঃ
নষকে দুনিয়ার আগুন থেকে রক্ষা করে, আর আলেমগণ রক্ষা রেন আখেরাতের আগুন থেকে।
যায় ইবনে জাবাল (রাঃ) বলেন ঃ আমি রাসূলে করীম (সাঃ) % তিনি ইরশাদ করেছেন ও দ্বীনি ইলম শিখ।

কেননা, ইলম শিক্ষা -তভীতি, তার অন্বেষণ ইবাদত, তার পাঠদান তাসবীহ এবং তার
জিহাদ। সে ব্যক্তি জানে না তাকে শিক্ষাদান করা খয়রাত। যােগ্য। ভন তা ব্যয় করা নৈকট্য। ইলম একাকীত্বে সহচর, সফরে সঙ্গী, = বাক্যালাপকারী, ধর্মের পথ প্রদর্শক, সচ্ছলতায় ও নিঃস্বতায় প্রদীপ, বন্ধুদের সামনে প্রতিনিধিত্বকারী, অপরিচিতদের মধ্যে নৈকট্য সৃষ্টিকারী, শত্রুর। বিরুদ্ধে হাতিয়ার এবং জান্নাতের পথে আলােকবর্তিকা।
পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে ?

অর্থ : “তােমার প্রতিপালকের পথে আহ্বান কর প্রজ্ঞা ও উত্তম উপদেশ সহকারে।” আরাে ইরশাদ হয়েছে ?

অর্থ ঃ “যখন আল্লাহ কিতাবওয়ালাদের (আলেমদের) কাছ থেকে অঙ্গীকার নিলেন যে, তােমরা এ কিতাব অবশ্যই মানুষের কাছে বর্ণনা করবে এবং একে গােপন করবে না।” | রাসূলে করীম (সাঃ) হযরত মুআয ইবনে জাবালকে ইয়েমেনে পাঠানাের। সময় ইরশাদ করেছেনঃ

অর্থ ও “যদি আল্লাহ তাআলা তােমার দ্বারা একটি লােককেও পথ প্রদর্শন। করেন, তবে তা হবে তােমার জন্য দুনিয়া ও দুনিয়ার সব কিছু থেকে উত্তম।”
তিনি আরাে বলেন ঃ যে ব্যক্তি ইলমের একটি অধ্যায় অন্যদের শেখানাের। উদ্দেশ্যে শিখবে, তাকে অবশ্যই নবী (আঃ) ও সিদ্দীকের সওয়াব দান করা হবে । হযরত ঈসা (আঃ)-এর উক্তি বর্ণিত আছে ঃ যে ব্যক্তি ইলম অর্জন করে। তদনুযায়ী আমল করে এবং মানুষকে শিক্ষাদান করে, সে আকাশ ও পৃথিবীর রাজত্বে মহান বলে কথিত হবে।

দাওয়াত ও তাবলীগ বর্তমান মুসলিম সমাজের বহু সমস্যা আছে। একটি হলাে, আমরা প্রায় সকলেই পাশ্চাত্য সভ্যতার অন্ধ অনুসারী ও হাস্যস্পদ মােসাহেব এবং চামচায়’ পরিণত হয়েছি। সকলেই যদি মােসাহেব বা ক্লাউন হই, স্বাভাবিক আচরণ। কষ্টকর।
তাবলীগ এবং দাওয়াতের ফলে ইসলামের অনুসারীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। বিশ্বাসী মুসলিমদের একটি সমাজ তৈরি হয়। তাদের মধ্যে ইসলামী আখলাক ও আদর্শের প্রচার এবং আমলকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি করা হলাে অগ্রাধিকারমূলক প্রাথমিক কাজ।

ওয়াজ মাহফিল, সভা, সম্মেলন, সেমিনার অনুষ্ঠান করা তাবলীগ এবং দাওয়তের উত্তম পদ্ধতি। ইসলামের প্রাথমিক যুগে ওয়াজ মাহফিল, সেমিনার, সম্মেলন, তাবলীগের ফলপ্রসূ প্রতিক্রিয়া ছিল না। সেমিনার, ওয়ার্কশপে এবং সম্মেলনেও উৎসাহ সহকারে যােগদানের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক মুসলিম মক্কী সমাজে ছিল না।

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কাবা ঘরে বা মদীনার মসজিদে এ আশায়। বসে থাকতেন না যে, লােকজন দলে দলে আগমন করে তাঁর কাছে ইসলামের বায়আত নেবে। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এবং প্রাথমিক সাহাবীগণ ইসলামের দাওয়াত নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে যেতেন।
ইসলামের বাণী বহন করে বাড়িতে বাড়িতে গমনই ছিল ইসলাম প্রচারের। প্রাথমিক পদ্ধতি। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “এক সকাল অথবা এক বিকাল। আল্লাহর রাস্তায় চলা দুনিয়া এবং আসমান এই দুয়ের মাঝখানে যা আছে সব

    Read More:  ➣   বদর হতে ওহোদ

চেয়ে উত্তম।” তদুপরি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কি বলেননি- “আমার একটি এ যদি তােমাদের জানা থাকে, তা মানুষের কাছে পৌঁছিয়ে দাও?”। হযরত আবু বকর (রাঃ) ইসলাম কবুল করার পর আল্লাহর রাসূলকে।
তস করেছিলেন এখন আমার কী কাজ? রাসূলুলাহ (সাঃ) জওয়াবে। বলেছিলেন- “আমার যে কাজ তােমারও সেই কাজ।”
দাওয়াত ও তাবলীগ কোন বিশেষ ব্যক্তির জন্য নির্দিষ্ট নয়। বরং প্রত্যেক সলিম নরনারীর জন্য দাওয়াত ও তাবলীগের দায়িত্ব পালন করা ফরজ। কেউ যদি ইচ্ছাকৃত ভাবে এ দায়িত্ব পালন না করে তাহলে এর জন্য তাকে আল্লাহর নিকট জবাবদিহি করতে হবে।
পথ নির্দেশিকা।
করে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্ পাক এরশাদ করেছেন

অর্থাৎ- মাসের সংখ্যা আল্লাহর কাছে বারােটি, আল্লাহর বিধান মােতাবেক যেদিন গগনমণ্ডল ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন সেদিন থেকেই, কিন্তু তার মধ্য চারটি নাস হচ্ছে সম্মানিত। এটাই স্থায়ী ব্যবস্থা, সুতরাং তােমরা এ সময়ে নিজেদের।
পর জুলুম করাে না। আর তােমরাও সমবেতভাবে কাফেরদের সঙ্গে লড়াই কর, যেরূপ তারা তােমাদের সঙ্গে লড়াই করে। আর জেনে রাখ, আল্লাহ্ পরহেজগারদের সাথে রয়েছেন।
উপরােক্ত আয়াতকে বিশ্লেষণ করলে চারটি বিষয় সহজেই অনুধাবন করা। মা এহ বিশ্বের শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য এই চারটি বিষয় অবগত হওয়া নেহায়েত দরকার।

এক, পরম করুণাময় আল্লাহ্ তা'আলা ঋতুচক্রের আবর্তনকে বারােটি মাসে, বিভক্ত করেছেন এবং বারাে মাসে এক বছর নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। আল্লাহ পাকের নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থার কোন রকম পরিবর্তন ও পরিবর্ধন হবে না। মানুষ। জ্ঞান-বিজ্ঞান ও মনীষার ক্ষেত্রে যত বেশি উন্নতিই করুক না কেন, আল্লাহর নির্ধারিত সীমারেখা লঙ্ঘন করা কারাে পক্ষেই সম্ভব নয়। এই প্রসঙ্গে সুস্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে। আল্লাহ বলেন

অর্থাৎ- “আল্লাহ পাকের সৃষ্টি মাহাত্ম্যের কোন পরিবর্তন হবে না।”
দুই, বছর ও মাস গণনার যে সুনির্দিষ্ট পন্থা আল্লাহ পাক নির্ধারিত করে দিয়েছেন তা পরিবর্তন করে কোন নতুন ব্যবস্থা কায়েম করা কিংবা নতুন দিনপ শীর অবতারণা করা অথবা নতুন ব্যবস্থার প্রবর্তন করা কিছুতেই সম্ভব নয়। কারণ তা হচ্ছে আল্লাহর চিরন্তন কুদরতের জ্বলন্ত স্বাক্ষর। যারা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস। রাখে না বা যারা আল্লাহর অস্তিত্বে অবিশ্বাসী, তাদের জন্য এই আয়াত একটি কঠোর সতর্কবাণী।

এই আয়াত প্রতিনিয়ত তাদেরকে সতর্ক করে দিচ্ছে যে“এখনাে সময় আছে আল্লাহর কুদরতের শাশ্বত নমুনা প্রত্যক্ষ করে আল্লাহর উপর ঈমান আনয়ন এবং তাঁর নিকট সর্বোতভাবে আত্মসমর্পণ কর। তবেই তােমাদের নাজাত মিলবে। অন্যথায় আল্লাহর শক্ত আজাব ও গজব তােমাদেরকে অচিরেই পাকড়াও করবে, যেমন তােমাদের পূর্ববর্তীগণকে পাকড়াও করেছিল।

তিন, এই বারােটি মাসের মধ্যে চারটি মাস বিশেষভাবে সম্মানিত ও  মতবার অধিকারী। সামগ্রিকভাবে প্রতিটি মাস ও প্রতিটি দিনের সবিশেষ ফযিলত ও কর্তব্য রয়েছে। এই ক্ষেত্রে একটি মাস ও একটি দিনের মধ্যে যেমন কোন ব্যতিক্রম নেই বা হবে না; তবে বিশেষ ক্ষেত্রে কোন কোন মাস ও দিনের আলাদা ফযিলত ও সম্মান রয়েছে যা সেই মাস বা দিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত কাজ বা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সংঘটিত হয়ে থাকে। নির্দিষ্ট ঘটনা বা অনুষ্ঠানই হচ্ছে সেই ফযিলত ও মর্তর ধারক।

এই তথ্যটুকু সহজভাবে বুঝতে হলে নিচের উদারহণটির প্রতি গভীরভাবে। লক্ষ্য করা দরকার। চারজন লােক একদা নির্দিষ্ট বাজার থেকে একই গােয়ালার। নিকট হতে দুধ ক্রয় করল। অতঃপর তারা একই সঙ্গে একই রাস্তা ধরে বাড়ির।

দিকে রওয়ানা হলাে। পথিমধ্যে তাদের একজন পরিচিত লােক এসে উপস্থিত হলাে এবং প্রত্যেকেই বালতি থেকে দুধ খাওয়াবার বাসনা ব্যক্ত করল। চার। বন্ধুর প্রত্যেকেই নিজ নিজ বালতি হতে সামান্য পরিমাণ দুধ পরিচিত ব্যক্তিকে খেতে দিল। দুধ খাওয়ার পর সে মন্তব্য করল যে, তােমাদের এই তিনজনের দুধ একই স্বাদযুক্ত, কিন্তু চতুর্থ ব্যক্তির দুধে একটি অতিরিক্ত স্বাদও রয়েছে। আর তা হচ্ছে মিষ্টতা।

এমন সময় চতুর্থ ব্যক্তি বললাে, হ্যা, তা ঠিকই বলেছেন। আমার বালতিতে কিছু পরিমাণ চিনি ছিল। দুধের সঙ্গে মিশ্রিত হওয়ার ফলেই অতিরিক্ত স্বাদ আপনি অনুভব করেছেন।
প্রকৃতপক্ষে দুধ হিসেবে প্রত্যেকের দুধের স্বাদই এক ও অভিন্ন। কিন্তু দ্বিতীয় পদার্থ চিনির সংযােগ সাধনের ফলেই এতে অতিরিক্ত স্বাদের অবতারণা ঘটেছে।

অনুরূপভাবে দিন ও মাসের মধ্যে বিশেষ ফযিলতের অর্থও তাই। দিন ও মাস হিসেবে সব কয়টির মূল ফযিলত একই। কিন্তু সংঘটিত ঘটনা বা অনুষ্ঠানের জন্য কোনটিতে অতিরিক্ত মর্যাদা প্রতিফলিত হয়েছে। যেমন আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন
 
অর্থাৎ- ইহা আল্লাহর অনুকম্পা মাত্র। তিনি যাকে চান, তাকে তিনি তা প্রদান করেন।

সম্মানিত মাস চতুষ্টয় হচ্ছে- (১) যিলক্বদ, (২) যিলহজ্জ, (৩) মহররম ও (৪) রজব। এই মাস চতুষ্টয়কে হারাম মাসও বলা হয়ে থাকে। এই মাসে। যুদ্ধ-বিগ্রহ, মারামারি, কাটা-কাটি আল্লাহ পাক হারাম করে দিয়েছেন। এই মাসগুলােতে সমাজগর্হিত ও হিংসাত্মক কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকার জন্য তাগিদ দিয়েছেন।

এই তাগিদ ও সতর্কতার পেছনে অনেকগুলাে হেকমত নিহিত রয়েছে। জ্ঞান ও মনীষার অধিকারী ব্যক্তিগণই তা কেবল অনুধাবন করতে সক্ষম।
মানব চরিত্রের একটি বিশিষ্ট দিক হচ্ছে ত্যাগ, তিতিক্ষা, সংযম ও সহিষ্ণুতা অবলম্বন করা এবং হিতসাধনের অনুপ্রেরণা লাভ করা। এই বিশেষ দিকটির। প্রতিফলন না ঘটলে মানব চরিত্রকে নিষ্কলুষ ও নির্মল এবং পবিত্র চরিত্র হিসেবে। চিহ্নিত করা যায় না। করুণাময় আল্লাহ পাক মানুষকে সেই গুণ অর্জন করার।

জন্য এবং পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যমে আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করার প্রতি সুস্পষ্টভাবে উৎসাহিত করেছেন। এর উজ্জ্বল নিদর্শন আমরা নিচের আলােচনা হতে লাভ করতে পারি।

চার, এই মাস চতুষ্টয়ে নিজেদের নফসের উপর জুলুম ও অত্যাচার না করার জন্য দয়াময় আল্লাহ তা'আলা স্বীয় বান্দাদেরকে নির্দেশ করেছেন। এই ক্ষেত্রে স্মরণ রাখা দরকার যে, নফসের উপর জুলুম করার অর্থ কী এবং কিভাবে নফসের উপর জুলুম করা হয়ে থাকে? আর নফস বলতে আমরা কী বুঝি? সুতরাং পর্যায়ক্রমে এগুলাের বিশ্লেষণ না করা পর্যন্ত এ সকল দিকের মূলতত্ত। উদ্ঘাটন করা সম্ভব হবে না। আসুন আমরা এ দিকে আশু সতর্ক দৃষ্টি প্রদান করি।


আমাদের কিছু কথা

বাংলায় লিখতে গিয়ে যদি কোনো ধরনের ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে তাহলে আমাদেরকে ইমেইল করে জানিয়ে দিবেন এবং ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

এবং যদি আপনাদের কোন ধরনের সাজেশন থাকে তাহলে অবশ্য আমাদেরকে ইমেইল করে জানিয়ে দিবেন

আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ

আমাদের এই পোস্টে ভিজিট করার জন্য

এবং যদি ভালো লাগে এই পোস্টটি তাহলে অবশ্যই শেয়ার করবেন।

Post a Comment

0 Comments