হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) জীবনী Part 12 -Islamic Life - Islamic History

 হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) জীবনী বই

হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) জীবনী, Islamic History

 হুযুর (সাঃ) প্রতি ভালবাসা

প্রতিটি কাজে ও কথায়ই প্রমাণিত হবে হযরত আয়েশা (রাঃ) হযরত নবী। করীম (সাঃ)-কে কিরূপ ভালবাসতেন। কিছু ঘটনার, উপমার প্রতি লক্ষ্য করলেই তা সকলের নিকট উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।

ন্যায় নীতি, সত্যের আধার নবী করীম (সাঃ) পালাক্রমে যেদিন হযরত আয়েশার (রাঃ)-এর গৃহে আগমন করতেন, তখনকার কোন রাত ঘুম হতে জেগ যদি আয়েশা (রাঃ) রাসূলুল্লাহকে তার পার্শ্বে না পেতেন তবে তিনি চিন্তায় অধীর হয়ে পড়তেন। যে পর্যন্ত নবী করীম (সাঃ)-কে খুঁজে বের করতে না পারতেন তার ব্যস্ততা দূর হত না।

একরাত্রে এমন একটি অবস্থা ঘটল

রাতের অন্ধকারে। নবীজী (সাঃ)-কে বিছানায় না পেয়ে তিনি অস্থির। আলাে জ্বালবারও কোন। ব্যবস্থা নেই। নিরুপায় হয়ে তিনি হাতড়িয়ে নবীজী (সাঃ)-কে খুঁজতে আর
বলেন। কিছুক্ষণ পর তাঁর হাত রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর পায়ের উপর পড়ল।

রাঃ (সাঃ) সিজদায় আল্লাহর নিকট প্রার্থনায় রত রয়েছেন।

অন্য এক রাতে তিনি নবী করীম (সাঃ)-এর প্রেমসিক্ত আবেষ্টনে ঘুমিয়ে পড়লেন। শেষ রাতে তাঁর ঘুম ভাঙ্গলে দেখতে পেলেন, নবী করীম (সাঃ) তাঁর ঘরে নাই। অধীর হয়ে তিনি দেখতে পেলেন- হযুর (সাঃ) জান্নাতুল বাকীর পাশে দাড়িয়ে মৃত ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে আল্লাহর নিকট মুনাজাত করতেছেন। এই অবস্থা দেখে কোন বাক্যালাপ ছাড়াই তিনি ঘরে ফিরে আসলেন। তিনি এরশাদ করলেন- আমি অদূরে কারাে কি একটা দেখছিলাম, এখন বুঝলাম উহা তুমিই ছিলে।

অন্য এক রাতে তিনি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে না পেয়ে মনে মনে ভাবলেন, হযরত (সাঃ) হয়ত অপর কোন মহিষীর ঘরে গিয়েছেন। দুঃখে ও ক্ষোভে তিনি জুলতে লাগলেন। পুনরায় তিনি বাবতে লাগেিলন তাকে রাতের বেলা একাকিনী রেখে রাসূলুল্লাহ অপর কোন মহিষীর নিকট গমন করা কোন মতেই সম্ভব নয়। তিনি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে অন্ধকার গৃহে খুঁজতে লাগলেন। তিনি দেখতে পেলেন, নবী করীম ঘরের এক কোণে আল্লাহর দরবারে ইবাদতে নিমগ্ন।

এ অবস্থায় তাঁকে দেখতে হযরত আয়েশা তবার এই কুধারনা জন্য অতিশয় লজ্জিত হলেন এবং আপনা আপনি তার মুখ হতে বের হয়ে আসল। - আমার জীবনের প্রতি শতধিক। আমি কেমন জঘন্য কুচিন্তায় রয়েছে আর রাসূলুল্লাহ। (সাঃ) কোন জগতে অবস্থান করতেছেন?

কোন এক সফরে হযরত আয়েশা ও হযরত হাফসা নবী করীম (সাঃ)-এর সহগামিনী ছিলেন। প্রতি রাতেই নবী করীম হযরত আয়েশার হাওদায় আগমন। করতেন। গভীর রাত পর্যন্ত কাফেলা চলতে থাকত। কালাে চলাকালীন সময় তিনি হযরত আয়েশার হাওদায় বসে তাঁর সাথে আলাপ-আলােচনা করতেন।

একদিন হযরত হাফসা হযরত আয়েশা (রাঃ)-কে বললেন, চল আমরা আজ হাওদা পরিবর্তন করি। ভােলা মনে তার প্রস্তাবে তিনি হাওদা পরিবর্তন করলেন। কাফেলা চলতে আরম্ভ করল। নবী করীম (সাঃ) অন্যান্য দিনের ন্যায় আজও হযরত হাফসা (রাঃ) উপবিষ্টা রয়েছেন। রাসূলুল্লাহ কোন কথাবার্তা না বলে। তাঁকে সালাম করে বসে পড়লেন।

এদিকে হযরত আয়েশার প্রেম সাগরে ভীষণ তােলপাড় শুরু হয়েছে।

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আগমন করবেন এই আশায় তার প্রহর কাটতেছে। কিন্তু তারকামনা ও বাসনার ধন আজ আর আসলেন না। তাঁর মনের অবস্থার আরাে। অবনতি হল। যখন কাফেলা তাঁবু ফেলল তার প্রতীক্ষিত প্রেমাস্পদের আমা আজকের মত ত্যাগ করলেন। তিনি হাওদা হতে অবতরণ করে প্রেমিকে বিরত ব্যথায় আপন পা মাটিতে আছড়িয়ে বলতে লাগলেন-“হে আল্লাহ! আমি তাহাকে কোন মতেই দায়ী করতে পারি না।

বরং তুমি কোন সাপ বা বিচ্ছ পাঠিয়ে দাও। যারা আমাকে দংশন করে।' | হযরত আয়েশা ক্ষণিকের তরেও রাসূলুল্লাহকে দৃষ্টির আড়াল হতে দিতে অসহ্য বােধ করতেন। অথচ নবী করীম (সাঃ) পালাক্রমেই আপন মহিষীগণের নিকট গসন করতেন। একরাত্রে হযরত আয়েশা শুয়ে আছেন, এমন সময়ে তিনি সাড়া পেলেন নবী করীম (সাঃ) ঘর হতে বের হচ্ছেন। হযরত আয়েমা ভাবলেন, তিনি হয়ত অপর কোন মহিষীর নিকট গমন করতেছেন। এই সন্দেহের বশবর্তী।

হয়ে ধীর পদে তিনি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে অনুসরণ করলেন। দেখলেন, রাসূলুল্লাহ। (সাঃ) এক কবরস্থানে মৃতদের উদ্দেশ্যে প্রার্থনায় মগ্ন হয়েছেন। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) প্রার্থনা শেষ করে ফিরিতেছেন দেখে তিনি দ্রুতপদে আপন গরে প্রবেষ করলেন। রাসূলুল্লাহ পূর্বেই এই ঘটনাটি উপলব্ধি করেছিলেন। ঘরে এসে তিনি আয়েশাকে বললেন- আয়েশা! মনের সনেইরহার কর, ইহা আদর্শ চরিত্রের লক্ষণ নয়।

নবী করীম (সাঃ)-এর উপদেশ তিনি নিঃসংকোচে মনের গােপন কথাটি হুযুর (সাঃ)-এর নিকট বললেন। সাথে সাথে স্বীয় অপরাধ মার্জনার জন্য তাঁর নিকট আবেদন জানালেন। - নবী পরিবারের চিরসাথী ছিল নিদারুণ অভাব। অনেক মহিষীই গৃহে আসবার পূর্বে অভাব চিনিতেনই না। তারা এরূপ দুঃখ-দৈন্যের মধ্যে জীবনযাত্রায় মােটেই অভ্যস্ত ছিলেন না। ইতােমধ্যে তাখাইয়ুর’ অধিকারের আয়াত নাজিল হল।

তাহাদিগকে এই অধিকার প্রদান করা হল- যার ইচ্চা নবী গৃহিণী হয়ে থাকতে পারে, যার ইচ্চা সে নবীর পত্নীত্ব ত্যাগ করে চলে যাওয়ার অধিকার রয়েছে। কিন্তু উম্মুল মু'মিনীনদের মধ্যে এমন একজনও হইলেন না যে, যিনি | ইহকালীন সামান্য ধনের মােহে ম্রাটের সঙ্গত্যাগ করে চলে যান। অভাব-অনটন। আরাে তীব্র হলেও তারা সকলেই হুযুর (সাঃ)-এর খেদমতে আপনাকে বিলিয়ে দিয়ে দণ্য হতে সম্মতি জ্ঞাপন করলেন। তবে সকলের পূর্বে হযরত আয়েমা তার। সম্মতির কথা হুযুর (সাঃ)-এর সমীপে পেশ করলেন। তিনি হুযুরের নকট।

নারীসুলভ অপর একটি কথাও বলিলেন, ‘আমি সকলের পূর্বে সম্মতি প্রদান করিয়াছি এইকথা অন্য কারও নিকট প্রকাশ করবেন না। ইহা দ্বারা বুঝা যায়। যে হযরত আয়েশা (রাঃ) হুযুরকে কত গভীরভাবে ভালবাসতেন। তার নিকট অভাব-অনটন প্রিয় স্বামীর তুকাবেলায় অতি তুচ্ছ ছিল। . হযরত আয়েশা আপন হাতে গৃহের সমুদয় কাজ সমাধা করতেন।

নিজেই রান্না-বান্না করে আপন হাতে হুযুর পাককে খাওয়াতে বিশেষ আনন্দ। পেতেন। কোন পরিচারিকার দ্বারা কখনও তিনি কাজ করাতেন না। নবী করীমের অজুর পানি তিনি সর্বদা আপন হাতেই যােড়া তরে রাথতেন। এমন কি ঘরের বিছানা কখনও অপরের হাতে করাইতেন না। মােটকথা, সাংসারিক যাবতীয় কাজ তিনি নিজেই করে তৃপ্তি বােধ করতেন। তিনি নিজ হাতে চিরুণী দ্বারা হুজুর পাকের দাড়ি, চুল আঁড়ড়িয়ে দিতেন বা সুগন্ধি মেখে দিতেন। অর্থাৎ তিনি হুযুর পাক (সাঃ)-এর যাবতীয় খেদমত করতে পারলেই নিজেকে ধন্য মনে করতেন।

তাখাইয়র’-এর আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার কিছুকাল পরে আরজার’ আয়াত নাজিল হয় এই আয়াতে আল্লাহ পাক রাসূল (সাঃ)-কে এই অধিকার দিলেন যে, আপনি যাকে ইচ্ছা রেখে অপরকে পরিত্যাগ করতে পারেন। কিন্তু জগতের সেরা চরিত্রবান নবী (সাঃ) মানবতার খাতিরে এই অধিকার কারও উপর প্রয়ােগ করলেন না। এই প্রসঙ্গে হযরত আয়েশা বলেন-“হুযুর! আপনাকে আল্লাহতায়ালা যে অধিকার দান করেছেন আমাকে প্রদান করলে একজনকে রেখে আর সকলকে বিদায় দিতাম।

নবী করীম ও হযরত আয়েশা অধিকাংশ সময়েই একই বরতনে আহার করতেন। রাতের বেলায় অনেক সময় হযরত আয়েশার ঘরে বাতি দিবার সংস্থান থাকত না। বাধ্য হয়ে অন্ধকারেই উভয়ে খেতে বসতেন। অন্ধকারে হযরত আয়েশা কোন একখানা গােস্তের টুকরার উপর হয়ত হাত রেখেছেন এমন সময় ঘটনাক্রমে রাসূল (সাঃ)-ও সেই একই টুকরায় হাত দিতেন। এই ঘটনায় ভয়েই মহা কৌতুকে হেসে উঠতেন। নবী করীম কোন একখানা হাড়ি
আর পর দস্তকখানে রাখলে হযরত আয়েমা (রাঃ) চুষিয়া খেতেন। আবার।

আয়েশা রাখলে নবী করমী (সাঃ) চুষে খেতেন। পানিপান করবার জন্য একটি পেয়ালাই ব্যবহার করতেন। পেয়ালার যে জায়গায় মুখ রেখে হযরত আয়েমা।

হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ)। ৮৬ পানি পান করতেন নবী করীমও ঠিক সেইখানে মুখ লাগিয়ে পানি পান করতেন। এই ছিল তাঁদের স্বামী-স্ত্রীর ভালবাসার মধুর সম্পর্ক। এ কোন কোন বিদ্বেষপরায়ণ চরিতকার বিশেষ করে ইউরােপীয় ঐতিহাসিকগণ লিখেছেন যে, হযরত আয়েশা ও নবী করীম (সাঃ)-এর মধ্যকার। ভালবাসা একতরফা ছিল। তাদের ধারণা (সাঃ) অপেক্ষা হযরত আয়েশা অল্প। বয়স্কা হওয়ােয় তিনিই হযরত আয়েশাকে মনে-প্রাণে ভালবাসতেন।

কিন্তু বৃদ্ধ। বয়সী নবী করমীকে হযরত আয়েশা আন্তরিকতার সাথে কোন সময় গ্রহণ করতে পারেন নাই। তাদের এই কল্পনাপ্রসূত উক্তি যে সর্বৈব মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তা। হযরত আয়েশার বিবাহিত জীবনের প্রতিটি কথা ও কাজে গতি সহজেই দিবালােকে ন্যায় পরিষ্কার হয়ে যাবে। হযরত আয়েশা নবী করীমকে স্বামীরূপে পেতে নিজেকে দুনিয়ার সেরা ভাগ্যবতী বলে গর্ব করতেন। তিনি অতি সহজ ও স্বাভাবিকবাবে নবী করীম (সাঃ)-এর সকল সময় আপনার কাছে আঁকড়িয়ে রাখবার জন্য চেষ্টা করতেন।

অথচ হুযুর (সাঃ)-এর অপরাপর মহিষীগণ বিদ্যমান থাকায় তা সম্ভব হত না বলে তিনি স্বামীর প্রতীক্ষায় উদ্বিগ্ন চিত্তে কাল কাটাতেন। পালা হিসেবে যেদিন হুযুর (সাঃ) তাঁর গৃহে তাশরীফ আনবার কতা থাকত সেইদিন নবী করীমের একটু বিলম্বে আগমনকে তিনি কিছুতেই সহ্য করতে পারতেন না। রাসূল (সাঃ)-কে অপর কেহ তার চেয়ে অধিক ভালবাসে এই কথা তিনি কারও নিকট শুনতে পেলে তার ধৈর্যের বাঁধ টুটিয়ে যেত। কারণ।

তর চেয়ে অধিক কেহ হুযুরকে ভালবাসে এটা ছিল তাঁর কল্পনার অতীত। তাই হযরত আয়েশা (রাঃ) হুযুর (সাঃ)-আরে খেদমত ও প্রেম-প্রীতি এবং সন্তুষ্টির নিমিত্ত তাঁর ব্যক্তিগত স্বার্থের কথা এক মুহুর্তের জন্যও চিন্তা করতেন না। একবার কোন সাহাবীর বিবাহ উপলক্ষে হুযুরে পাক (সাঃ) একটি বােজের আয়ােজন করতে মনস্থ করলেন। কারণ উক্ত সাহাবীর ভােজের ব্যবস্থা করবার। মােটেই সামর্থ্য ছিল না। তখন হুযুর (সাঃ) জনৈক সাহাবীকে বললেন, আয়েশার (রাঃ) গৃহে তরকারীর ঝুড়িটে নিয়ে এস।

সেই সাহাবী আয়েমার গৃহ হতে ঝুড়িটি নিয়ে আসলেন। সেইদিন হযরত আয়েশার গুহে ইহা ব্যতীত খাইবার। মত আর কিছুই ছিল না। তিনি তা রাসূল পাকের সন্তুষ্টির জন্য পরম আনন্দে
পাঠিয়ে ঐ রাত্র নিজে অভুক্ত কাটালেন।

হযরত আয়েশা (রাঃ) দাম্পত্য জীবনে এমন কোন কাজ করতেন

না যাতে নবী করীম (সাঃ) অসন্তুষ্ট হতে পারেন। তাঁর অসন্তুষ্টির লক্ষণ দেখলেও তৎক্ষণাৎ
কাজ পরিত্যাগ করতেন। এই ব্যাপারে নিম্নবর্ণিত ঘটনাগুলাের প্রতি লক্ষ্য বলে তা সহজেই অনুধাবন করা যাবে| ‘তাবুক যুদ্ধে হযরত (সাঃ) জয়লাভ করেছেন শুনে হযরত আয়েশা তার ঘরখানা সাধ্যমত সজ্জিত করলেন। হুযুর (সাঃ) ঘরের দরজায় এসেই বিরক্তির।

ভাব প্রকাষ করলেন। তাঁর বিরক্তি লক্ষ্য করে আয়েশা তৎক্ষণাৎ দরওয়াজা হতে পর্দাখানা সরিয়ে ফেললেন। হুযুর (সাঃ) ঘরে প্রবেশ করে আয়েশাকে বললে, আল্লাহ তায়ালা আমাকে যে সব ধন-সম্পদ দান করেছেন তা মাটি বা ইট সাজাবাই জন্য নহে। হযরত আয়েশা (রাঃ) বিনম্রভাবে স্বীয় কাজের নিমিত্ত ক্ষমা অনুরূপ আর একটি ঘটনা ঘটেছিল খয়বর যুদ্ধের সময়ও।

খয়বর যুদ্ধে মুসলমানগণ জয়লাভ করেছেন শুনে হযরত আয়েশা রাসূল (সাঃ)-এর মনাের নের জন্য ছবিযুক্ত একখানা পর্দা ঘরের দরওয়াজায় লটকিয়ে দিলেন। এই পর্দা দেখামাতই হুযুর (সাঃ)-এর চেহারা রক্তবর্ণ ধারণ করল। হযরত আয়েশা বুঝলেন, তিনি অসন্তুষ্ট হয়েছেন। তাই বিলম্ব না করে পর্দাখানা খুলে ফেললেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাঁকে বললেন, প্রাণীর ছবি যেই ঘরে থাকবে সেই ঘরে আল্লাহর রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করে না। কাজেই ছবি রাখা নিতান্ত অন্যায়।

হযরত আয়েশা এবং নবী করমী (সাঃ)-এর এহেন ভালবাসা ও প্রেম
প্রীতির প্রতি কটাক্ষ করে কোন হিংসাপরায়ণ চরিতকার রাসূলুল্লাহ প্রতি অতিশয় জঘন্য অপবাদ দিয়েছে। তাদের এ অপবাদ সম্পূর্ণ কল্পনা-প্রসূত। তাদের এই সকল । অপবাদের উত্তর হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর হাদীসের প্রতি লক্ষ্য করলেই পাওয়া যাবে। তিনি বলেছেন- বহু সময় আমরা উভয়ে হাসী-খুশী ও গল্প-গুজবে মাতিয়ে।

কতাম। এমন সময় আজানের সময় হলে রাসূলুল্লাহ এরূপ ব্যস্ততার সহিত। মসজিদের দিকে গমসন করতেন যেন তিনি আমাকে চিনিতেন না।' হযরত "মশা (রাঃ)-এর এ বর্ণনা দ্বারা ইহাই প্রমাণিত হয় যে, হুযুর (সাঃ) সকল। সময়ই কর্তব্য কর্মে অতিশয় সজাগ ছিলেন। কোন প্রকার সুখ-শান্তি বা।

আরাম-আয়েশ তাঁকে কর্তব্য কর্ম হতে এক মুহূর্তের জন্যও বিরত রাখতে পারেনি। মানব প্রকিতির আকর্ষণে তিনি স্ত্রীগণের সহিত মধুর সম্পর্ক স্থাপন করে তাহাদিগকে অভিভূত করে রেখেছিলেন। সাথে সাথেই তিনি আল্লাহর আদেশ পালনে, সমাজের উপকারে, মজলুমের করুণ আর্তনাদে আপন দেহ-প্রাণ বিনা দ্বিধায় বিলিয়ে দিয়ে যে আদর্শ স্থাপন করে গিয়েছেন তার নজীর পৃথিবীর বুকে আর কারও পক্ষে সম্ভব নহে।

পতিগত-প্রাণা হযরত আয়েশা হুজুর (সাঃ)-এর পদানুসরণ করে একদিকে। যেমন একজন আদর্শ স্ত্রী হিসেবে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর সেবা করে আপন। জীবনকে ধন্য করতে, তাঁকে আপনার নিকট জড়িয়ে রাখতে চেয়েছিলেন, পরক্ষণেই রাসূলুল্লাহর অন্যান্য মহিষীগণের অধিকার চিন্তা করে তনুহূর্তেই আপন প্রিয়জনকে সরল চিত্তে বিদায় দিয়ে করুণাময় আল্লাহতায়ালার ইবাদতে নিমগ্ন। হতেন।

তাঁর এই মহান চরিত্র নারীকুলের জন্য এক উজ্জ্বল নক্ষত্র বিশেষ

তাঁর দাম্পত্য জীবনের আদর্শ চিরদিন নারীর জন্য এক মহান শিক্ষা হিসেবেই পরিগণিত হবে। যে তাঁর শিক্ষার আলােকে আপন জীবনকে পরিচালিত করতে তার নারী জন্ম সার্থক হবে। তার নারী জন্ম পাথক হবে।


আমাদের কিছু কথা

বাংলায় লিখতে গিয়ে যদি কোনো ধরনের ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে তাহলে আমাদেরকে ইমেইল করে জানিয়ে দিবেন এবং ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

এবং যদি আপনাদের কোন ধরনের সাজেশন থাকে তাহলে অবশ্য আমাদেরকে ইমেইল করে জানিয়ে দিবেন

আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ

আমাদের এই পোস্টে ভিজিট করার জন্য

এবং যদি ভালো লাগে এই পোস্টটি তাহলে অবশ্যই শেয়ার করবেন।

Post a Comment

0 Comments