হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) জীবনী - ইসলাম ধর্মের প্রতি অনুরাগ - Part 13 - Islamic History

 হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) জীবনী বই

হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) জীবনী - ইসলাম ধর্মের প্রতি অনুরাগ

ইসলাম ধর্মের প্রতি অনুরাগ

 শিশু বয়স হতেই হযরত আয়েশার ধর্মের প্রতি এক তীব্র অনুরাগ ছিল। আদর্শ চরিত্রের অধিকারী পিতা হযরত আবুবকর ছিদ্দীক (রাঃ) ও মাতা উম্মে রুমানের নিটকট হতে অল্প বয়সেই নামায-রােযার অনুশীলন শুরু করেন। স্বামী গৃহে যাওয়ার পূর্বেই তিনি তৎসময়ে অবতীর্ণ কোরআন শরীফ তেলাওয়াত করেছিলেন।

ইসলাম প্রচারের কেন্দ্রস্থল হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর আবসস্থানকে বললেই চলে। শরীয়তের যাবতীয় হুকুম-আহকাম মসজিদে নববীতে বসেই আলােচিত হত। আর আয়েশার ঘর ছিল মসজিদেরই সংলগ্ন একটি প্রকোষ্ঠ। যে কোন আলাপ আলােচনাই তিনি গরে বসে শুনতেন। আর সেই হুকুম-আহকাম সাথে সাথেই ব্যক্তিগত জীবনে প্রয়ােরগের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতেন। এমার পর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) গৃহে ফিরে মেছওয়াক করতেন এবং অযথা কাল বিলম্ব না করে শুয়ে পড়তেন। রাত্রির শেষ ভাগে জেগে তিনি তাহাজ্জুদ নামায আদায় করতেন।

৪ সময় আয়েমাকে জাগাতেন। তিনিও হযুর (সাঃ)-এর সাথে তাহাজুজদ ও বেতের আদায় করতেন।
PO BOUT ছােবহে ছাদেক হলে ফজরের ছুন্নাত আদায় করে কিছু সময়ের জন্য আরাম করতেন। এ সময়ে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ডানদিক ফিরে শয়ন করতেন ও হযরত আয়েশাকে বিভিন্ন উপদেশাবলী ও দ্বীনের কথা শুনাতেন। আজান হলে তিনি মসজিদে চলে যেতেন এবং জামাতের সাথে ফজরের নামায আদায় করতেন। হযরত আয়েশা (রাঃ) আপন কক্ষে থেকে জামাতে শাতিল হতেন।

পাঁচ ওয়াক্ত নামায ব্যতীত আয়েশা দৈনিক রাসূলুল্লাহ (সাঃ) যে সব নামায পড়তেন তাও আদায় করতেন। রমজানের শেষভাগে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ই’তেকাফ করতেন। ঐ সময় আয়েশাও মসজিদের আঙিনায় তাবুত ই'তেকাফে বসতেন। | হিজরী এগার সনে তিনি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর সহিত হজ্জব্রত পালন করবার জন্য মক্কাধামে গমন করেন। সেখানে তিনি হজ্জ ও ওমরার নিয়ত করেন। কিন্তু নারীঘটিত কারণে তিনি হজ্জ ও ওমরা পালন করতে পারেন নাই।

ফলে তিনি অতিশয় মর্মাহত হন এবং কাঁদতে থাকেন। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাঁর কান্নার কারণ জানতে পেরে তাকে সান্ত্বনা ও তৎসম্বন্ধীয় হুকুম বলে দেন। পরবর্তীকালে তিনি তাঁর সহােদর ভাই আবদুর রহমান ইবনে আবুবকর (রাঃ)-এর সহিত হজ্জ আদায় করেন।
হযরত আয়েশা (রাঃ) পতিগৃহে যেদিন প্রথম আগমন করলেন সেই দিন। রাসূলুল্লাহ গৃহে নববধূকে আপ্যায়ন করবাের মত কেবল জনৈক সাহাবী কর্তৃক।

প্রেরিত এক পেয়ালা দুধই ছিল

ইহাই হুযুর (সাঃ), আয়েশা এবং তাঁর সাথী আসমা পান করেছিলেন। এই কথা বলার তাৎপর্য এই যে, এই একটি ঘটনার। প্রতি লক্ষ্য করলেই নবী পরিবারের আর্থিক সংগতির পরিপূর্ণ চিত্র পাঠকের নিকট অতি পরিষ্কারভাবে ধরা পড়বে। হযরত আয়েশা এখানে এসে দাসদাসী বা পরিচারিকা দ্বারা পরিবৃতা ছিলেন না। তিনি নিজ হাতেই গম, যব যাতায় পিয়ে আটা তৈরি করতেন।

আটা তৈরির সময় ক্লান্তির দরুন তিনি ঘুমিয়ে পড়লে প্রতিবেশির বকরী এসে সমুদয় আটা খেয়ে যেত। এরূপ কিছু ঘটনা পূর্বে উল্লেখ করেছি। সংসারের কাজ-কর্ম পরিচারিকার উপর ছেড়ে দিয়ে তিনি নির্বকারে বসে থাকতেন না। বিশেষত তিনি নিজ হাতে রান্না-বান্না করে হুযুর (সাঃ)-কে পরিবেশন করে তৃপ্তি লাভ করতেন। হুযুর (সাঃ)-এর জামা-কাপড় পরিষ্কার করা, কূপ হতে অজুর। পানি তুলে রাখা, তার কেশ ও দাড়ি বিন্যাস তিনি অতি যত্নের সাথে করতেন। . রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর মনােরঞ্জনের জন্য তিনি ঘর সাজিয়ে রাখতে এটি।

করতেন না। ঘর সাজাতে যেয়ে তাবুকের যুদ্ধের পর রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর। বিজয়ের খবর শুনে একখানা ছবিযুক্ত কাপড় দরওয়াজায় ঝুলিয়ে দেন। কিন্তু রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ছবি দেখিয়ে একটু থমকিয়ে দাঁড়ালেই তিনি বুঝতে পারলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইহা পছন্দ করেন নাই। সুতরাং তিনি তাড়াতাড়ি ইহা। দরওয়াজা হতে সরিয়ে নেন। - হযরত আয়েশা (রাঃ) নিজ হাতেই বিছানা পাতিতেন। এই অতি নগণ্য। কাজটিও তিনি অপরের দ্বারা করাতেন না।

সপত্নীতের সাথে আচার ব্যবহার। নানা ক্ষেত্রে নারী জাতি যত সহনশীল ও ধৈর্যের পরিচয়ই দিক না কেন, তারা কোন অবস্থায়ই স্বামীর উপর অন্যের অধিকার বা সতীনের পাল্লায় পড়া কোন মতেই সহ্য করে না। ইহা যেন তাদের প্রকৃতিগত স্বভাব। অথচ হযরত আয়েশা এই সময়ে আটজন সতীনের ঘর করিয়াছেন। ক্ষণিকের জন্যও তাঁর মধ্যে উক্ত নারীসুলভ আচরণ দেখা যায়নি। রাসূলুল্লাহর সাহচর্যে থেকে তারা সকলেই এমন মহান চরিত্রের অধিকারিণী হয়েছিলেন যা নারী জাতির জন্য।

উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে রয়েছে

উম্মুল মু'মিনীন হযরত খাদীজার ইন্তেকালের পর রাসূলুল্লাহর (সাঃ) নানা অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে একাদিক্রমে এগারজন মহিলাকে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ। করেন। তাদের মধ্যে হজরত জয়নব (রাঃ) উম্মুল মাসাকীনকে তৃতীয় হিজরীতে বিবাহ করেন। বিবাহের মাত্র তিন মাস পর ইনি ইন্তেকাল করেন। অপর ।

মহিষীগণ হুযুর (সাঃ)-এর ওফাত পর্যন্ত জীবিত ছিলেন। হযরত আয়েশার। দাম্পত্য জীবনে রমােট নয় বছর সময়ে তিন যে আটজন সতীনের সহিত সংসার। করেছেন তাঁদের নাম ও বিবাহের তারিখের প্রতি লক্ষ্য করলে দেখা যাবে তিনি কত বৎসর কতজন সতীনের সাথে স্বামী-সংসার করেছিলেন।

নাম । বিবাহের সন । উম্মুল মু'নিনীন হযরত কাদীজাতুল কোবরা (রাঃ) নবুওতের ১৫ বৎসর পূর্বে। ১) উম্মুল মুনিনীন হযরত সাওদা বিনতে যামআহ (রাঃ) হিজরতের তিন বৎসর পূর্বে ৩। উম্মুল মুনিনীন হযরত আয়েশা (রাঃ) | হিজরতের তিন বৎসর পূর্বে।

উম্মুল মুনিনীন হযরত হাফসা বিনতে ওমর (রাঃ) হিজরী ৩য় সন। ৫। উম্মুল মু'নিনীন হযরত উম্মে সালমা (রাঃ) হিজরী ৪র্থ সন ৬। উম্মুল মুনিনীন হযরত জোয়ায়রিয়াহ (রাঃ) হিজরী ৫ম সন । ৭। উম্মুল মুনিনীন হযরত যয়নব বিনতে জহশ (রাঃ) হিজরী ৫ম সন । ৮। উম্মুল মু'নিনীন হযরত উম্মে হাবীবাহ (রাঃ) হিজরী ৫ম সন ৯। উম্মুল মুনিনীন হযরত মাইমুনা (রাঃ)
হিজরী ৭ম সন ১০। উম্মুল মু'নিনীন হযরত সুফিয়া (রাঃ)
হিজরী ৭ম সন ১১। উম্মুল মু'নিনীন হযরত মারিয়ায়ে কিবতিয়াহ (রাঃ) হিজরী ৫ম সন।

কোন কোন ঐতিহাসিক লিখেছেন যে, রাসূলুল্লাহ উপরােল্লিখিত মহিষীগণ। ব্যতীত জনৈক আরব সর্দার কন্যাকে বিবাহ করিয়াছিলেন। কিন্তু স্বামীগৃহে। আসার সাথে সাথেই তিনি তাঁকে পরিত্যাগ করেন।
নিম্নে উম্মুল মু'মিনীনগণের দাম্পত্য জীবনের সংক্ষিপ্ত আলােচনা করা হল। এ থেকে তাঁদের সহিত আয়েমার অন্তরঙ্গতা ও হৃদ্যতার পরিচয় মিলবে।

উম্মুল মুমিনীন হযরত খাদীজাতুল কোবরা (রাঃ) রাসূলে করীম (সাঃ)-এর প্রথম মহিষী ছিলেন উম্মুল মু'মিনীন হযরত খাদীজাতুল কোবরা (রাঃ)। তিনি ছিলেন তৎকালীন আরবের একজন মর্যাদাসম্পন্ন মহিলা। তাঁর অগাধ ধন-সম্পদ ছিল। ব্যবসা-বাণিজ্যে তাঁর খ্যাতি ছিল, তকালীন গুটি কয়েকজনের মধ্যে প্রধান।

ব্যবসা-বাণিজ্যে তাঁর খ্যাতি ছিল

এক সময় রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তার ব্যবসা পরিচারনা করেন। এই সময় তিনি রাসূলুল্লাহ সততা, কর্তব্যনিষ্ঠা ও ন্যায়পরায়ণতায় বিশেষভাবে আকৃষ্ট হন। পরিণামে তাঁকে স্বামী হিসেবে পাবার মানসে তাঁর নিকট প্রস্তাব পাঠান। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তার স্বজনের অনুমতিক্রমে ২৫ বছর বয়সে ৪০ বছর বয়স্কা এই বিধবা মহিলাকে বিবাহ করেন।

বিবাহের পর হযরত খাদীজা (রাঃ)

আপন সমুদয় ধন-সম্পদ স্বামীর হাতে অর্পণ করেন। হযরত খাদীজার ধন-সম্পদ, স্নেহ-ভালবাসা এবং সমযােপযােগী।পরামর্শ ইসলাম প্রচারে যে মহান অবদান রেখেছিল, তা অতুলনীয়। তিনি ছিলেন সর্বপ্রথম মুসলমান। দীর্ঘ ১৫ বছর তিনি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর সাহচর্যে ছিলেন।

তণার জীবিত কালে হুযুর (সাঃ) অপর কোন বিবাহ করেন নাই। তার গর্ভেই রাসূলুল্লাহর সব কয়টি সন্তান-সন্ততি জন্মগ্রহণ করেন। হযরত ফাতেমা তার গর্ভের সর্বকনিষ্ঠা কন্যা। হযরত খাদীজাকে আয়েশা সপত্নী হিসেবে দেখেন নাই। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাঁর পরবর্তী মহিষীগণের নিকট আলাপ-আলােচনার মাধ্যমে। প্রায়ই ব্যক্ত করতেন। তাঁর স্মৃতি সব সময় রাসূলুল্লাহের অন্তরে বিরাজমান ছিল।

তাই হয়রত আয়েশা (রাঃ) হযরত খাদীজাকে অতিশয় শ্রদ্ধার সহিত স্মরণ করতেন। তিনি বলেন, হযরত খাদীজা (রাঃ)-এর প্রতি আমার যতটা সপত্নী ভারব ছিল অন্য কোন সপত্নীর প্রতি ততটা ছিল না। কারণ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আমার নিকট প্রায়ই তার বিষয় আলােচনা করতেন।

প্রতি বছর তাঁর নামে কোরবানী করতেন ও তাঁর সখীদের জন্য উপঢৌকন পাঠাতেন।
হযরত খাদীজার মর্যাদা ও দ্বীনদারী সম্বন্ধে তাঁর বিশেষ আস্থা ছিল। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলিয়াছেন,-খাদীজা জান্নাতবাসিনী। হযরত খাদীজা রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে কিভাবে সাহায্য করিয়াছেন, “বিপদে কি প্রকারের সান্ত্বনা প্রদান করিয়াছিলেন ইত্যাদি বিষয়ে হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বিস্তারিত অনেক আলহামমেহে!

হযরত সাওদা বিনতে যামআহ (রাঃ) উম্মুল মু'মিনীন হযরত খাদীজাতুল কোবরা (রাঃ) ইন্তেকারের পর হযরত সাওদা (রাঃ) ও হযরত আয়েশার (রাঃ) বিবাহ অল্প ব্যবধানে একই বছর অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু বিবাহের পর হযরত আয়েশা অপ্রাপ্ত বয়স্কা ছিলেন বলে প্রায় সাড়ে তিন বছর পিত্রালয়ে ছিলেন। এই সময় হযরত সাওদা রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর একমাত্র পত্নী চিলেন বললেই চলে।

হিজরী প্রথম সালে হযরত আয়েশা পতিগৃহে আগমন করেন

তাঁর আগমেন হযরত সাওদার অস্বস্তি বােধ হওয়া ছিল স্বাভাবিক। কারণ দীর্ঘ দিন তিনি রাসূলুল্লাহর মহিষীরূপে একাকিনী। থাকায় সেখানে অপরের আগমন স্বভাবতঃই তাকে পীড়া দিতে পারে বলে সকলেরই ধারণা জন্মিতে পারে। কিন্তু তার এমন কোন লক্ষণই দেখা যায়নি। তাঁদের চালচলন, উঠা-বসা, কথা-বার্তা, আচার-ব্যবহার সবই ছিল সম্পূর্ণ।

পরীত। সকল কাজে তারা একে অন্যকে সাহায্য করতেন এবং উভয়ে একমত হয়ে সানন্দে ঘর-সংসারের কাজ সমাধা করতেন। হযরত সাওদা (রাঃ) ঘর-কান্নার কাজে সকল সময় হযরত আয়েশাকে সাহায্য করতেন ও প্রয়ােজনীয় পরামর্শ প্রদান করতেন।
হযরত সাওদা ছিলেন বয়ঃবৃদ্ধ মহিলা। তাই ইতােমধ্যে তার মধ্যে একটি। ভল ধারণার সৃষ্টি হল।

তিনি মনে করলেন, তিনি বৃদ্ধা হয়ে পড়েছেন, তাই নবী করীম (সাঃ) তাঁকে তালাক দিতে পারেন। যার ফলে তিনি তাঁর সাহচর্য হতে। বঞ্চিত হবেন। তাই তিনি রাসূলুল্লাহকে সর্বদা হযরত আয়েশার সঙ্গলাভের জন্য আপন অধিকার পরিত্যাগ করলেন। অথচ তাঁর এ ধারণা সম্পূর্ণরূপে ভ্রান্ত ও কল্পনা প্রসূত, তদুপরি বাস্তবিক হয়ে থাকে বিধায় ধারণাটি করা স্বাভাবিক। হযরত আয়েশা হযরত সাওদাকে অতিশয় শ্রদ্ধা করতেন এবং খুব প্রশংসা করতেন। হযরত আয়েশা বলেন, আমি হযরত সাওদাকে একান্ত আপন হিসেবে গণ্য করতাম। তাকে দেখে আমি বলতাম, তাঁর দেহে যদি আমার আত্মা হত।

হযরত হাফসা বিনতে ওমর (রাঃ) সিদ্দীকে আকবর (রাঃ)-এর স্নেহের ধন হইলেন হযরত আয়েশা (রাঃ)। অপরদিকে হযরত ওমরের নয়নের মণি ছিলেন হাফসা (রাঃ)। হিজরী তৃতীয় সনে রাসূলুল্লাহর সহিত পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন। সপত্নীরূপে তারা দীর্ঘ আট বছর অতিবাহিক করেন। কোন সময়ই তাঁদের মধ্যে মনৈক্যের ভাব দেখা যায়। নাই। উভয়ের মধ্যে দারুণ হৃদ্যতা, আন্তরিকতা ভাব বিরাজমান ছিল।। পারিবারিক কাজ-কর্মে তারা একে অন্যকে সাহায্য করতেন। হাফসা অতিশয় । সুন্দরী ও বিদুষী ছিলেন। বহুবার তারা বিদেশ ভ্রমণে সহযাত্রী ছিলেন।

( হযরত উম্মে সালমা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) হযরত উম্মে সালমাকে বিয়ে করেন হিজরী চতুর্থ সনে।। জ্ঞান-গরিমা এবং বুদ্ধিমত্তার দিক দিয়ে হযরত আয়েশার পরেই তাঁর স্থান ছিল।। তাঁর বিচক্ষণতা, রাজনৈতিক ও পারিবারিক জীবনের অভিজ্ঞতা এবং অসাধারণ। জ্ঞানের জন্য রাসূলুল্লাহ তাঁকে অতিশয় সম্মান করতেন। হােদাইবিয়ার সন্ধির সময় কোরবানীর ব্যাপারে তিনি রাসূলুল্লাহকে যে পরামর্শ দিয়েছিলেন তা।

হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ)। ৯৪। রাজনীতির ক্ষেত্রে সমগ্র পৃথিবীর রমণীর জন্য ইতিহাসে একটি স্মরণীয় ঘটনা হিসবে লিপিবদ্ধ থাকবে।

এত গুণের অধিকারিণী এবং বয়ঃবৃদ্ধা হওয়া সত্ত্বেও তিনি ছিলেন হযরত আয়েশা (রাঃ) অপেক্ষা কিছুটা স্বতন্ত্র। কোন দাবী-দাওয়া আদায়ের ব্যাপারে। অন্যান্য মহিষীগণ তাঁকেই রাসূলুল্লাহর খেদমতে প্রেরণ করতেন। তিনি অতিশয়। কোমল ও মিষ্টি বচরে রাসূলুল্লাহর (সাঃ)-এর অবস্থা ও পরিস্থিতির প্রতি লক্ষ্য। রাখে উহা তাঁর খেদমতে পেশ করতেন। একবার উম্মুল মু'মিনীনগণ নিম্নবর্ণিত।

ঘটনাটি জানবার জন্য তাঁকে নবী করীম (সাঃ)-এর সমীপে প্রেরণ করেন। ঘটন। হল- পালা অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ যখন যে মহষিীর ঘরে অবস্থান করতেন। সাহাবিগণ যেন সেখানেই হাদিয়া তােহফা প্রেরণ করেন। এই ব্যাপারে যেন। হযরত আয়েশাকে প্রাধান্য দেয়া না হয়। রাসূলুল্লাহ ঐ সময় হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর গৃহেই আরাম করতেছিলেন। হযরত উম্মে সালমা তাঁর নিকট গমন করে অতিশয় নম্রতা ও বিনয়ের সাথে তার সমীপে কথাটি আরজ করলেন।

উত্তরে নবী করীম (সাঃ) বললেন- উম্মে সালমা! আয়েশার ব্যাপারে আমাকে বিরক্ত করবে না। আল্লাহর প্রায় অহী তাঁর গৃহে অবতীর্ণ হয়েছে। উত্তর শুনে উম্মে সালমা নীরব হয়ে গেলেন। হযরত আয়েশা সেখানেই ছিলেন, কিন্তু সপত্নীর কথায় তিনি একটুও বিরক্তি বা অসন্তুষ্টি প্রকাশ করলেন না।

হযরত আয়েশা তাঁকে অতিশয় শ্রদ্ধা করতেন। তিনি বলতেন, আমি তাঁকে বিশেষভাবে সম্মান করতাম। তিনি আমার গৃহে আসলে আমি তাকে আসন ছেড়ে দিতাম। তিনিও আমাকে ছােট বােনের মত স্নেহ করতেন। এমনকি অনেক সময় তিনি রাসূলুল্লাহ সাথে যুক্তি-তর্কের অবতারণা করতেন তা বড়ই মনােযােগের সহিত আয়েশা শ্রবণ করতেন। রাজনৈতিক আলােচনায় তিনি যে প্রজ্ঞার পরিচয় দিতেন তাতে হযরত আয়েশা অবাক হয়ে যেতেন।

হযরত উম্মে জোয়ায়রিয়াহ (রাঃ)। রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর সাথে উম্মুল মুমেনিন হযর যােয়ায়রিয়াহ (রাঃ) পরিণয় হয় হিজরী ৫ম সনে। তার চেহারায় এমন কমনীয়তা ছিল যে তাকে দেখিবামাত্রই দর্শকের অন্তরে স্তেন ও ভক্তিতে আর্দ্র হয়ে উঠত।
হযরত আয়েশা বলেন যে, জোহয়ায়রিয়াহ তাঁকে অতিশয় স্নেহ করতেন এবং অবসন সময় বসিয়ে তার নিকট আপন পূর্ব জীবনের কাহিনী শুনাতেন।

৯৫ সরত আয়েশা (রাঃ) তাঁকে দেখার পূর্বে তাঁর রূপের কথা শুনে একটু চিন্তিত
সছিলেন এই ভেবে যে, হয়ত তণার রূপের দরুন স্বামীর নিকট স্বীয় মর্যাদা কিছটা লােপ পেতে পারে। দেখা গেল তাঁর এই ধারনা ভুলের উপরই প্রতিষ্ঠিত ছিল।

(21) এ মহিলার দরুন তাঁর সম্প্রদায়ের যে উপকার সাধিত হয়েছিল, তা তাঁর সম্প্রদায় কোনদিনই ভুলতে পারবে না। বনী মুসতালীকের যুদ্ধে পরাজিত হয়ে তাঁর সম্প্রদায়ের অনেক লােক মুসলমানদের হাতে বন্দী হয়। নবী করীম (সাঃ)। যখন জানতে পারলেন যে, তাঁরা উম্মুল মু'মিনীন হযরত যােয়ায়রিয়াহর আপন সম্প্রদায়ের লােক, তখন স্বীয় স্ত্রী যােয়ায়রিয়াহর সম্মানে সকলকে মুক্ত করে দেন।


আমাদের কিছু কথা

বাংলায় লিখতে গিয়ে যদি কোনো ধরনের ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে তাহলে আমাদেরকে ইমেইল করে জানিয়ে দিবেন এবং ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

এবং যদি আপনাদের কোন ধরনের সাজেশন থাকে তাহলে অবশ্য আমাদেরকে ইমেইল করে জানিয়ে দিবেন

আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ

আমাদের এই পোস্টে ভিজিট করার জন্য

এবং যদি ভালো লাগে এই পোস্টটি তাহলে অবশ্যই শেয়ার করবেন।

Post a Comment

0 Comments