হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) জীবনী Part 25 -হুযুরে পাক (সাঃ)-এর ভূমিষ্ঠ - Islamic Life History

হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) জীবন কাহিনী

হুযুরে পাক (সাঃ)-এর ভূমিষ্ঠ - Islamic Life History bangla

হুযুরে পাক (সাঃ)-এর ভূমিষ্ঠ

হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে বিবি আমেনা ঘরের মা সম্পূর্ণ একাকিনী ছিলেন। হঠাৎ তিনি আকাশের দিক হতে একটা প্রচণ্ড আওয়াজ শুনতে পেয়ে অত্যন্ত ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়লেন। পরক্ষণেই অবিকল মােরগাকতি একটি পাখী উড়ে এসে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করল ও তার পালক দটি দিন আমেনার মাথা স্পর্শ করাল।

মিষ্টি জাতীয় খাদ্য

তাতে তাঁর অন্তর হতে সমস্ত ভয়-ভীতি দূর হল এবং তিনি বেশ আনন্দ ও আরাম বােধ করতে লাগলেন। তখন মােরগটি কিছু মিষ্টি জাতীয় খাদ্য বিবি। আমেনার মুখে ঢুকিয়ে দিল।

More Info: রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর যুদ্ধ ও অভিযান সমূহ

বর্ণনান্তরে দেখা যায়, মােরগটি চলে যাবার পর জনৈক সুন্দর যুবাপুরুষ এসে বিবি আমেনাকে একগ্লাস মিষ্টি শরবত পান করাল। তা দেখতে ছিল দুধের মত সাদা, কিন্তু খেতে ছিল মধুর মত মিষ্টি। বিবি আমেনা বলেন, এরপর আমা হতে যেন একটা অপরূপ জ্যোতি বের হয়ে উর্ধাকাশের দিকে উঠে গেল। পরক্ষণেই আমার নিকট কয়েকজন সুন্দরী স্ত্রীলােক এসে উপস্থিত হলেন।

আমি তাঁদের পরিচয় জিজ্ঞেস করে জানলাম, তাঁরা হলেনঃ হযরত হাজেরা, হযরত মরিয়ম এবং হযরত এসে। তারা আমাকে বিশেষভাবে আশ্বস্ত করলেন, আপনার কোন দুশ্চিন্তা বা ভয়ের কারণ নেই। আল্লাহর নির্দেশে আমরা আপনার পরিচর্যার জন্য আগমন করেছি। এ সময় আমি একটি অদৃশ্য আওয়াজ শুনতে পেলাম ? শিশুটিকে মানুষের দৃষ্টির অন্তরালে রাখুন।

আমি তারপর আবার দেখলাম, বেশ কিছু সুন্দরী মহিলা রূপার তস্তরীতে করে মেশক, আম্বর ও অন্যান্য সুগন্ধি দ্রব্য নিয়ে এসে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করল। আমি আরও দেখতে পেলাম যে, কতকগুলাে অপূর্ব পাখী আমার ঘরের উপরে উড়ে বেড়াতে লাগল।

ঐ ধরনের সুন্দর বর্ণ এবং আকৃতির পাখী ইতােপূর্বে আমি আর কোনদিন দেখিনি। তা দেখে আমার চক্ষু জুড়িয়ে গেল। এমনি অবস্থার মধ্যে আমার পুত্র মুহাম্মদ (সাঃ) ভূমিষ্ঠ হল। আমি কোনকিছুই উপলব্ধি করতে পারলাম না। সে ভুমিষ্ঠ হয়েই সিজদায় পতিত হয়ে বলল, “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু। মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ।

শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার রাতে ঘটনা

শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার রাতে ঘটনাক্রমে আমার ঘরে কোন প্রদীপ ছিল না। কিন্তু আমার ছেলের দেহের আলােকে আমার ঘরাভ্যন্তর এরূপ আলােকিত হল। যে, ঘরের মেঝে পতিত উঁচও সে আলােতে তুলে লওয়া যেত। সে আলাের ছটা চোখের সামনে তখন ভে
মনই উজ্জ্বল ছিল যে, তার ঝলকে সুদূরবর্তী সিরিয়া দেশটি পর্যন্ত আমার
র সামনে তখন ভেসে উঠল।

বিবি আমেনা বলেন, এরপর একখন্ড সাদা মেঘ নেমে এসে শিশুকে আমার। কোল হতে তুলে নিয়ে গেল। এ সময় কে যেন বলল, একে পূর্ব পশ্চিমের সমগ্র । চাকা ঘুরিয়ে নিয়ে আস, যেন সারাটা দুনিয়া এর নিকট পরিচিত হয়ে যায়। কচক্ষণ পর উক্ত সাদা মেঘখন্ড প্রত্যাবর্তন করে আমার পুত্রকে আবার কোলে। ফিরিয়ে দিল। পরক্ষণেই দেখলাম, সূর্যালােকের মত সুন্দর চেহারাবিশিষ্ট তিনজন এসে আমার নিকট দন্ডায়মান হল।

একটি স্বর্ণের লােটা

তাদের একজনের হাতে ছিল একটি স্বর্ণের লােটা, আর একজনের হাতে ছিল এক টুকরা রেশমী কাপড়ে আবৃত আংটি এবং অন্যজনের হাতে ছিল একখন্ড সুন্দর পশমী কাপড়। তাদের প্রথম ব্যক্তির কোল। হতে আমার ছেলেকে নিয়ে তাদের লােটার পানি দিয়ে তাকে গােসল করাল। দ্বিতীয় ব্যক্তি রেশমের কাপড়ের ভিতর হতে আংটিটি বের করে তার দু’স্কন্ধের মাঝখানে ঐ আংটির দ্বারা একটি চাপ মেরে দিল। অতঃপর তৃতীয় ব্যক্তি তার।

হাতে রাখা পশমী কাপড়ে লেপটায়ে তাকে আমার কোলে দিয়ে তার কানে কানে। কিছু কথা বলল। আমি তার সবকথা বুঝতে পারলাম না। তবে যা বুঝতে পারলাম তা এই যে, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ তােমাকে এমন গায়েবী এলেম দান করলেন, যা কাউকেও দেয়া হয়নি। আর তােমার প্রতি শুভ সংবাদ এই যে, যারা তােমাকে আল্লাহর নবী বলে মান্য করবে ও তােমার প্রতি ঈমান আনবে তারা তােমার উম্মত বলে গণ্য হবে এবং তারা দোযখের আযাব হতে বেঁচে যাবে।

ধাত হালিমা সাআদিয়ের ঘরে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আরবে তখন ব্যাপকভাবে প্রচলন ছিল, ধনী অভিজাত শ্রেণীর লােকজন তাদের শিশু সন্তানদেরকে স্তন্য ও লালন-পালন করার উদ্দেশ্যে গ্রামে বসবাসকারিণী ধাত্রীদের হাতে সােপর্দ করত। ধাত্রীগণ নিজ সন্তানের মত পরম যত্নে তাদেরকে নিজের দুগ্ধ দ্বারা লালন-পালন করতেন। এ ব্যবস্থার ফলে উত্তম। পরবেশ এবং ধাত্রীদের আন্তরিকতার সাথে যত্নের ফলে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক দু’দিক দিয়েই উপকার এবং উন্নতি হত।

হযরত হালিমা (রাঃ) নিজের জন্য দুগ্ধপােষ্য শিশু সংগ্রহ ও শিশু নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর লালন-পালন সম্পর্কে নিজের মুখে যে সকল উক্তি পেশ করেছিলেন, এখানে আমরা তাই বলছি।

হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ)

হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ)। হযরত রাসূলে করীম (সাঃ)-যে বছর ভূমিষ্ঠ হয়েছিলেন, সে বছর শুরুর কিছুদিন পূর্বে আরবে বিশেষত মক্কার চতুর্দিকের জনপদগুলােতে বেশি দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছিল। যার ফলে ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সঙ্কটাপন্ন হলেও দরিদ্র লােকজন একেবারে চরম সঙ্কটের সম্মুখীন হয়েছিলেন। হালিমা বলেন ঃ এত প্রবল অভাব দেখা দিল যে, খাদ্যাভাব ও অর্থাভাবে আমার ঘরের সকলে অনাহারে কাটাত।

আমার এক ভাইকে সঙ্গে নিয়ে আমার স্বামী ময়দান হতে ঘাস কেটে এনে। বাজারে বিক্রয় করে অতি সামান্য যে মূল্য পেতেন তা দ্বারা কোনরূপে দু'একদিনের সামান্য খাবার যােগাড় হত। অবশ্য আমি কখনও এতে অধৈর্য হইনি। সর্বাবস্থায়ই আল্লাহতায়ালার শােকর আদায় করে ধৈর্যাবলম্বন করে। রয়েছি।।

ঘটনাক্রমে ঐ সময় আমি অন্তঃসত্ত্বা ছিলাম। কাজেই ঐরূপ অবস্থায়। অনাহারে থাকার ফলে আমার খুবই কষ্ট হচ্ছিল। যথাসময় আমার একটি সন্তান। ভূমিষ্ঠ হল। তার নাম রাখলাম মুনির। ক্রমাগত অনাহারে থেকে আমার স্তনের দুগ্ধ শুকিয়ে গেল। সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশু সন্তানটি দুধ না পেয়ে মরণ অবস্থায় উপনীত হল।


এমনি অবস্থায় আমি একদিন নিদ্রিতাবস্থায় স্বপ্নে দেখলাম, একটি স্বচ্ছ পানিভর্তি পুষ্করিণী আর তার পানি হতে মেশকের ঘ্রাণ নির্গত হচ্ছিল।

পানির রং দেখা যাচ্ছিল অবিকল দুগ্ধের মত। জনৈক অপরিচিত ব্যক্তি আমাকে বলল, - হালিমা! তুমি যত পার এ পুষ্করিণীর পানি পান করতে পার। তাতে তােমার। বুকের দুধ বৃদ্ধি পাবে এবং তােমার দেহও সবল হবে। তার কথামত আমি পানি। পান করলাম। তাতে সত্যই আমি অত্যন্ত আরাম বােধ করলাম। তখন সেব্যক্তি আমাকে জিজ্ঞেস করল, তুমি কি আমাকে চিনতে পেরেছ ?

আমি বললাম, চিনব কি করে? তােমাকে তাে আর কখনও আমি দেখিনি। তখন সে বলল যে, আমি তােমার শােকর। তুমি চরম সঙ্কটাপন্ন অবস্থায়ও। আল্লাহর শােকর আদায় করেছ, এজন্যই তিনি আমাকে তােমার নিকট পাঠিয়ে দিয়েছেন। আল্লাহতায়ালা তােমার উপর অত্যন্ত খুশী। সুতরাং দেখবে আজ হতেই তিনি স্তনে দুগ্ধ বাড়িয়ে দিবেন। হঠাৎ আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল। জাগ্রত হয়ে দেখলাম, দুটি স্তনই দুগ্ধে পরিপূর্ণ। এ আশ্চর্য ঘটনার আনন্দে উৎফল হয়ে আল্লাহর দরবারে অসংখ্য শােকর আদায় করলাম।

 উল্লেখ্য যে, মক্কার পার্শ্ববর্তী এলাকা হতে ধাত্রীগণ মাঝে মাঝে দুধ পান। ভরাতে শিশু আনয়ন করার উদ্দেশ্যে মক্কায় যেত। ঐ সময় একদল ধাত্রী মক্কায় বার জন্য প্রস্তুত হল। হালিমা সাদিয়া যখন বাড়ী হতে মক্কার দিকে রওয়ানা তলেন, তখন তাঁর গাধাটি অত্যন্ত দুর্বল ছিল। পক্ষান্তরে, তার সাথে অন্য যেসব মহিলা মক্কা চলেছিল, তাদের প্রত্যেকেরই বাহন ছিল শক্ত সামর্থ্য সুতরাং তার গাধাটি দ্রুত চলতে অসমর্থ হওয়ার জন্য মহিলাগণ সকলেই তাকে পথে ফেলে রেখে অনেক আগেই মক্কা পৌছে গেল।
 

 এতীম শিশু হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)

তিনি মক্কায় পৌঁছে দেখলেন, তাঁর। সঙ্গিণীরা সকলেই শুধুমাত্র একটি এতীম সন্তান ব্যতীত মক্কার বাকী সব সন্তানই নিয়ে গেছে। বিবি হালিমা তাঁর স্বামীকে নিয়ে বহু খোঁজাখোজি করেও কোন ধনী বা সচ্ছল ঘরের সন্তান না পেয়ে অবশেষে মহান আল্লাহতায়ালার উপর নির্ভর করে এতীম শিশু হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-কেই গ্রহণ করে দেশে রওয়ানা হলেন। উক্ত শিশুকে নিয়ে যখন তিনি তার সে দুর্বল গাধাটির উপর আরােহণ করলেন, অমনি আল্লাহর অপার মহিমায় তা বহুগুণে বলীয়ান হয়ে গেল এবং দ্রুততর।
 

বিবি হালিমা আশ্চর্য হয়ে ভাবলেন

 বেগে চলতে আরম্ভ করল। এ লক্ষ্য করে বিবি হালিমা আশ্চর্য হয়ে ভাবলেন, এ শিশুরই মাহাত্ম্য ও অপূর্ব বােযৰ্গীর গুণে এ অবস্থা ঘটেছে। এরূপ চিন্তা করতে করতে কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি দেখলেন, যে সকল মহিলারা মক্কা হতে শিশু নিয়ে বহু আগেই তাকে ফেলে স্বদেশাভিমুখে রওয়ানা হয়েছিল, এবার তার। গাধাটি তাদেরকে অনেক পিছনে ফেলে সামনে এগিয়ে গেল এবং মহিলাদের বহু। আগেই নিজ দেশ তায়েফে উপনীত হলেন।
 
তিনি বাড়ীতে পৌছে দেখতে পেলেন, তাঁর কৃশ ও দুর্বল বকরীগুলাে খুবই বলিষ্ঠ ও হৃষ্ট-পুষ্ট হয়ে গেছে। প্রত্যেকটি বকরীর বাটই দুধে পরিপূর্ণ। এতে তিনি বিস্ময়াভিভূত হয়ে গেলেন। কারণ মক্কা রওয়ানা হবারকালে এগুলাে একেবারে অধমৃত ছিল, আর এ অল্প সময়ের ব্যবধানে এরূপ পরিবর্তন কি করে সম্ভব হল।

হালিমার বকরীগুলাে এত বেশী পরিমাণে দুধ দিতে লাগল যে, তা দেখে তাঁর প্রতিবেশীগণ আশ্চর্য হয়ে গেল। তারা বিবি হালিমার কাছে এর কারণ জিজ্ঞেস করল, কিন্তু তিনি তার কোন জবাব না দিয়ে নীরব রইলেন। শিশুনবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর ছিনাচাক বা বক্ষবিদারণ
| হযরত হালিমা সাআদিয়ে বলেন, যথাসময়ে শিশু মুহাম্মদ (সাঃ)-কে দুগ্ধ ছাড়িয়ে আমি তাকে মক্কায় তাঁর মাতার হাতে সােপর্দ করে আসতে গেলাম।

মাটেই আমার বলতে কি, এমন বরকতওয়ালা বাের্গ শিশুকে হাতছাড়া করতে মােটেই ভয় মন চাইছিল না। তাঁর প্রতি আমার এত বেশী মায়া ও মহব্বত সৃষ্টি হয়েছিল । তার তুলনা নেই; কিন্তু তা সত্ত্বেও তাকে তাে আর চিরদিন বেঁধে রাখা যাবে না কোন অধিকারে তাঁকে রাখব, যার পুত্র তার হাতে তাকে অবশ্যই ফিরিয়ে দিতে।

হবে- এর অন্যথা চলবে না। অতএব, ব্যথিত হৃদয়কে কোনমতে দমন কত শিশু মুহাম্মদ (সাঃ)-কে হযরত আমেনার হাতে তুলে দিয়ে বললাম, মাননীয়া। এ আপনার হৃদয়ের পুত্তলি, সােনার মানিক, অমূল্য মহারত্নকে নিজের হাতে গ্রহণ করুন।

হযরত আমেনা তাঁকে সক্রোড়ে নিয়ে সস্নেহে চুম্বন করলেন। এরপর আমি। হযরত আমেনাকে লক্ষ্য করে বললাম, মাননীয়া! আপনার পুত্রকে যদি আরও একটু বলিষ্ঠ ও হৃষ্টপুষ্ট হওয়া পর্যন্ত আমার নিকট রেখে দিতেন, আমার মতে তা ভাল হত। বিশেষতঃ এখন মক্কায় মহামারী আকারে যে ব্যাধির প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে, তাতে আমি অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুর এখানে না থাকাই ভাল মনে করি। এখন আপনার যা অভিরুচি তাই করুন।

হযরত আমেনা আমার কথাটা শুনে ভাল মনে করেই তাঁর পুত্রকে আমার। নিকট দিয়ে দিলেন। আমি তাঁকে নিয়ে আমার বাড়ীতে আসলাম। এর। দু’তিনমাস পরের ঘটনা, শিশু মুহাম্মদ (সাঃ) একদিন আমার নিকট বললেন, আমার দুধভাই প্রতিদিন এত দীর্ঘ সময় ঘরে থাকে না কেন? কোথায় চলে যায়? আমি বললাম, সে বকরীর পালের সাথে মাঠে যায়। শুনে শিশুনবী (সাঃ) বলেন, তবে আমিও তাে তার সাথে যেতে পারি।

আমি রাজী হয়ে পরদিন তাঁকে আমার পুত্রের সাথে মাঠে যেতে দিলাম; কিন্তু মাঠে যাবার কিছুক্ষণ পরেই আমার ছেলে কাঁদতে কাঁদতে দৌড়ে এসে। আমাকে বলল, আমাদের কোরায়শী ভাইটিকে দুজন সাদা পােশাক পরিহিত। লােক হঠাৎ ধরে নিয়ে গেল। আমি দূর হতে দেখলাম, লােক দুটি তাকে চিভাবে শয়ন করিয়ে তার বুক চিরে ফেলে ভিতর হতে কি যেন বের করে। ফেলল।।

ছেলের মুখে এহেন ভয়ানক খবর শুনে আমি আমার স্বামীর নিকট বললাম। এবং তখনই আমরা উভয়েই দৌড়ে যথাস্থানে পৌছলাম। গিয়ে দেখলাম, তিনি। দাঁড়িয়ে আছেন। তবে তার শরীরে মাটি দেখে আমি অস্থির হয়ে গেলাম।

আমার
পী তাকে কোলে তুলে নিয়ে সস্নেহে বললেন, বৎস! বলতে কি ঘটনা হয়েছে? করে তিনি বললেন, দুজন সাদা পােশাকধারী পুরুষ এসে আমাকে ধরে নির্জন। জায়গায় নিয়ে আসল এবং আমাকে শােয়ায়ে আমার ছিনা ফেড়ে কি যেন বের। করে নিয়ে আবার বুকমধ্যে পূর্বের মত করে দিয়ে অদৃশ্য হয়ে গেল। | তার মুখে একথা শুনে আমার স্বামী বললেন, হালিমা ! আমার খুবই ভয় হচ্ছে এ মানিকটির উপর বিপদ আপতিত হয় না কি?

তুমি আমার সাথে মক্কায় চল, বিপদ-আপদ আসার আগেই আমরা একে জননীর কাছে যথারীতি পৌঁছে। দিয়ে আসি। এরপর আমরা স্বামী-স্ত্রী তাঁকে নিয়ে মক্কা গেলাম এবং তাঁর মাতার। নিকট তাঁকে পৌঁছে দিয়ে সমস্ত ঘটনা ব্যক্ত করলাম।

তিনি ধৈর্যের সাথে এ শুনে আমাদেরকে অভয় প্রদান করে বললেন, তােমরা এর উপর কোন জ্বিন-ভূতের আছর হয়েছে মনে করে ভয় পেয়েছ, কিন্তু জেনে রাখ, আমার এ সন্তানের প্রতি কোন জ্বিন-ভূতের আছর হতে পারে না। আল্লাহর কসম! আমার এ সন্তানের প্রতি জ্বিন-ভূতের কোন আধিপত্যই নেই। তবে তােমরা যা দেখেছ, নিশ্চয়ই এ তাঁর কোন অভিনব মু'জেযা। তােমরা যখন তাঁকে নিয়ে এসেছ, আমার নিকটই রেখে যাও। তখন আমরা তাঁকে তাঁর নিকট রেখে আসলাম।

হযুরে পাক (সাঃ)

হযুরে পাক (সাঃ)-এর বুক বিদীর্ণ হওয়ার ঘটনা সম্পর্কে প্রধানতঃ দুটি অভিমত দেখা যায়। একটি এ যে, মােট চারবার বুক বিদীর্ণ হয়েছে। যথাঃ প্রথমবার বিবি হালিমার ঘরে থাকা অবস্থায়, দ্বিতীয়বার নবুয়ত প্রাপ্তির আগে দশ বছর বয়সের সময়। তৃতীয়বার নবুয়ত প্রাপ্তির কিছু পূর্বে তাঁর ইবাদাত ও ধ্যানস্থল হিরা পর্বত গুহায় এবং চতুর্থবার মেরাজ শরীফে গমন করার পূর্বে।

অপর বর্ণনাকারীর মতে হযুরে পাক (সাঃ)-এর বুক বিদীর্ণ মােট তিনবার। হয়েছিল। যথাঃ প্রথমবার বিবি হালিমার ঘরে, দ্বিতীয়বার হিরা পর্বত গুহায় এবং তৃতীয়বার মেরাজ শরীফে গমন করার পূর্বক্ষণে।।


আমাদের কিছু কথা

বাংলায় লিখতে গিয়ে যদি কোনো ধরনের ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে তাহলে আমাদেরকে ইমেইল করে জানিয়ে দিবেন এবং ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

এবং যদি আপনাদের কোন ধরনের সাজেশন থাকে তাহলে অবশ্য আমাদেরকে ইমেইল করে জানিয়ে দিবেন

আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ

আমাদের এই পোস্টে ভিজিট করার জন্য

এবং যদি ভালো লাগে এই পোস্টটি তাহলে অবশ্যই শেয়ার করবেন।

Post a Comment

0 Comments